ই-পাসপোর্ট E-Passport কি,ই-পাসপোর্ট করতে কি কি ডকুমেন্টস প্রয়োজন, ই-পাসপোট আবেদন এর নিয়ম, পাসপোর্ট পেতে কতো দিন সময় লাগে, পাসপোর্ট করতে কতো টাকা খরচ হয় ইত্যাদি সম্পর্কে আজকের আর্টিকেলটি। এই আর্টিকেলে ই পাসপোর্ট সম্পর্কে বিস্তারিত আলোচনা করা হবে। তাহলে চলুন আজ জেনে নেই ই-পাসপোর্ট সম্পর্কে বিস্তারিত।
ই-পাসপোর্ট কি?
ইলেকট্রনিক বা ই–পাসপোর্টের যুগে প্রবেশ করেছে বাংলাদেশ। বিশ্বের ১১৯ তম দেশ হিসেবে ই–পাসপোর্ট চালু করেছে বাংলাদেশ। ই-পাসপোর্ট হলো বায়োমেট্রিক পাসপোর্ট যাতে একটি এমবেডেড ইলেকট্রনিক মাইক্রোপ্রসেসর চিপ রয়েছে।
ইলেকট্রনিক মাইক্রোপ্রসেস চিপ এর মধ্যে রয়েছে বায়োমেট্রিক তথ্য যা পাসপোর্টধারীর পরিচয় প্রমাণের জন্য ব্যবহার করা হয়। এতে মাইক্রোপ্রসেসর চিপ এবং অ্যান্টেনাসহ স্মার্ট কার্ড প্রযুক্তির ব্যবহার করা হয় এবং পাসপোর্ট এর গুরুত্বপূর্ণ তথ্য চিপে সংরক্ষণ করা হয়।
আশাকরি বোঝতে পেরেছেন ই-পাসপোর্ট কি।
বাংলাদেশের সরকার কয় ধরনের পাসপোর্ট ইস্যু করে
বাংলাদেশ সরকার তিন ধরনের পাসপোর্ট ইস্যু করে থাকে। এর মধ্যে একটি হলো লাল মলাট যা কূটনৈতিক পাসপোর্ট, নীল মলাট যা দাপ্তরিক পাসপোর্ট, এবং সবুজ মলাট যা নিয়মিত বা সাধারণ পাসপোর্ট।
পাসপোর্টের মলাট টিয়ার প্রুফ টেক্সটাইল উপাদান দিয়ে তৈরি যা রাসায়নিক, ঘাম, স্যাঁতসেঁতে এবং তাপ প্রতিরোধী। কূটনৈতিক পাসপোর্ট কেবল বাংলাদেশের কূটনীতিকদের দেওয়া হয়। সরকারী পাসপোর্ট কেবলমাত্র বাংলাদেশ সরকারি কর্মচারী, সরকারী কর্মকর্তা এবং দূতদের দেওয়া হয়।
বাংলাদেশের অন্যান্য নাগরিকদের নিয়মিত বা সাধারণ পাসপোর্ট দেওয়া হয়। সকল পাসপোর্ট পরিবেশ বান্ধব উপকরণ দিয়ে তৈরি হয়ে থাকে।
ই-পাসপোর্ট করতে খরচ কত?
আপনি কি ই-পাসপোর্ট করার কথা ভাবছেন বা ই-পাসপোর্ট করতে আপনার কতো টাকা খরচ হবে সেই বিষয়ে চিন্তা করছেন। তাহলে এই লেখাটি আপনার জন্য চলুন আজকে জেনে নেই ই-পাসপোর্ট করতে আপনার কতো টাকা খরচ হবে।
আপনার ই-পাসপাের্টের ধরণ এবং দ্রুততার ওপর ভিত্তি করে ই-পাসপাের্টের ফিস নির্ধারিত হয়ে থাকে। নিম্নে ই-পাসপাের্টের জন্য বাংলাদেশ সরকার কর্তৃক নির্ধারিত ফি সমূহ দেওয়া হলােঃ
৫ বছরের মেয়াদ সম্বলিত ৪৮ পাতার ই-পাসপাের্ট
৫ বছর মেয়াদে ৪৮ পাতার ই-পাসপোর্ট করতে আপনার যা খরছ হবে নিছে দেওয়া হলো :
- নিয়মিত ই-পাসপাের্ট- ১৫ কর্মদিবসের মাঝে প্রদানঃ ৮,০২৫ টাকা।
- জরুরী ই-পাসপাের্ট- ৭ কর্মদিবসের মাঝে প্রদানঃ ৬,৩২৫ টাকা।
- অতি আর্জেন্ট জরুরী ই-পাসপাের্ট- ২ কর্মদিবসের মাঝে প্রদানঃ ৮,৬২৫ টাকা।
১০ বছরের মেয়াদ সম্বলিত ৪৮ পাতার ই-পাসপাের্ট
১০ বছর মেয়াদে ৪৮ পাতার ই-পাসপোর্ট করতে আপনার যা খরছ হবে নিছে দেওয়া হলো :
- নিয়মিত ই-পাসপাের্ট- ১৫ কর্মদিবসের মাঝে প্রদানঃ ৫,৭৫০ টাকা।
- জরুরী ই-পাসপাের্ট- ৭ কর্মদিবসের মাঝে প্রদানঃ ৮,০৫০ টাকা।
- অতি আর্জেন্ট জরুরী ই-পাসপাের্ট- ২ কর্মদিবসের মাঝে প্রদানঃ ১০,৩৫০ টাকা।
৫ বছরের মেয়াদ সম্বলিত ৬৪ পাতার ই-পাসপাের্ট
৫ বছর মেয়াদে ৬৪ পাতার ই-পাসপোর্ট করতে আপনার যা খরছ হবে নিছে দেওয়া হলো :
- নিয়মিত ই-পাসপাের্ট- ১৫ কর্মদিবসের মাঝে প্রদানঃ ৬,৩২৫ টাকা
- জরুরী ই-পাসপাের্ট- ৭ কর্মদিবসের মাঝে প্রদানঃ ৮,৩২৫ টাকা।
- অতি আর্জেন্ট ই-পাসপাের্ট- ২ কর্মদিবসের মাঝে প্রদানঃ ১২,০৭৫ টাকা
১০ বছরের মেয়াদ সম্বলিত ৬৪ পাতার পাসপাের্ট
১০ বছর মেয়াদে ৬৪ পাতার ই-পাসপোর্ট করতে আপনার যা খরছ হবে নিছে দেওয়া হলো :
- নিয়মিত ই-পাসপাের্ট- ১৫ কর্মদিবসের মাঝে প্রদানঃ ৮,০৫০ টাকা।
- জরূরী ই-পাসপাের্ট- ৭ কর্মদিবসের মাঝে প্রদানঃ ১০,৩৫০ টাকা।
- অতি আর্জেন্ট ই-পাসপাের্ট- ২ কর্মদিবসের মাঝে প্রদানঃ ১৩,৮০০ টাকা
আশা করি উপরে আলোচনা থেকে ৫ বছরে ৪৮ পাতার ই-পাসপোর্ট এবং ১০ বছরে ৪৮ পাতা ই-পাসপোর্ট। ৫ বছরের ৬৪ পাতা ই-পাসপোর্ট ও ১০ বছরের ৬৪ পাতা ই-পাসপোর্ট করতে কত টাকা খরচ হয় সেই সম্পর্কে বিস্তারিত আপনারা জানতে পেরেছেন।
পাসপোর্ট করতে কি কি লাগে?
আপনি যদি একজন বাংলাদেশী এবং একটি পাসপোর্ট করতে চান তাহলে আপনার যে কাগজপত্র বা ডকুমেন্টগুলো প্রয়োজন হবে সেগুলো নিচে দেওয়া হল:
১। ই-পাসপোর্টের আবেদন অনলাইন কপি (প্রিন্ট কপি)
২। পাসপোর্ট অ্যাপ্লিকেশন সামারি কপি (প্রিন্ট কপি)
৩। পাসপোর্ট ফি প্রদানের স্লিপ (মূল কপি/প্রিন্ট কপি)
৪। জাতীয় পরিচয়পত্র (NID) অথবা অনলাইন জন্মনিবন্ধন সনদ (BRC English Version) (ফটো কপি এবং মূল কপি)
৫। পিতামাতার জাতীয় পরিচয়পত্রের কপি (শিশুদের ক্ষেত্রে আবশ্যিক)
৬। নাগরিক সনদ
৭। পেশা প্রমাণের সনদ
৮। পূর্বের পাসপোর্টের ফটো কপি এবং মূল কপি (যাদের আগের পাসপোর্ট আছে)
উপরে উল্লেখিত ডকুমেন্টস গুলো আপনার ই-পাসপোর্ট করতে প্রয়োজন হবে।
১৮ বছরের কম যাদের NID Card হয়নি তাদের কি লাগবে
১৮ বছরের কম যাদের এখন এনআইডি কার্ড হয়নি অনলাইন জন্ম নিবন্ধন দিয়ে পাসপোর্ট আবেদন করতে পারবেন। যাদের বয়স ১৮ বছরের কম এবং এখনো জাতীয় পরিচয়পত্র হয়নি তারা চাইলে তাদের অনলাইন জন্ম নিবন্ধন সনদ ব্যবহার করে ই পাসপোর্ট এর জন্য আবেদন করতে পারবেন। ১৮ বছরের কম বয়সি ও জাতীয় পরিচয় পত্র হয়নি তাদের পাসপোর্ট করার জন্য যা যা প্রয়োজন তা নিচে দেওয়া হলো –
- অনলাইন জন্ম নিবন্ধন সনদ (BRC) ও এর ফটোকপি
- ই পাসপোর্ট আবেদনের – Application Summery
- পাসপোর্ট আবেদনের ফরম – Application Form
- পাসপোর্ট ফি পরিশোধের চালান / ব্যাংক ড্রাফ কপি
- নাগরিক সনদ
- পেশা ছাত্র ছাত্রী হলে Student ID / Certificate
১৮ বছরের কম বয়সীদের ই-পাসপোর্ট এর জন্য উপরে উল্লেখিত কাগজগুলো প্রয়োজন হবে।
শিশুদের নতুন পাসপোর্ট আবেদনের জন্য প্রয়োজনীয় কাগজপত্র
নিচে শিশুদের জন্য পাসপোর্ট আবেদন করতে যে যে ডকুমেন্টসগুলো প্রয়োজন তা দেওয়া হল :
- অনলাইনে আবেদনকৃত ফর্মের প্রিন্ট কপি http://passport.gov.bd/
- ২ কপি রঙিন ছবি (৫৫ মিমি × ৪৫ মিমি, সাদা ব্যাকগ্রাউন্ড)
- জাতীয় পরিচয়পত্র অথবা জন্ম সনদের (অনলাইন ভেরিফাইড) কপি
- শিশুদের ( ১৫ বছরের নিচে) ক্ষেত্রে অতিরিক্ত যা লাগবেঃ
- বাংলাদেশী জন্ম সনদ ( শিশুর জন্ম যদি অন্য কোন দেশে হয়ে থাকে ,তাহলে দূতাবাস হতে বাংলাদেশী জন্মসনদ সংগ্রহ করা যাবে।)
- যে দেশে জন্মগ্রহন করেছে সেই দেশের জন্মনিবন্ধন সার্টিফিকেট কপি।
- পিতামাতার পাসপোর্ট কপি
- পিতামাতার রঙিন ছবি (৩০ মিমি × ২৫ মিমি, সাদা ব্যাকগ্রাউন্ড)।
উপরে শিশুদের পাসপোর্ট আবেদনের জন্য যা যা প্রয়োজন তা দেওয়া হল।
ই-পাসপোর্ট অনলাইন আবেদন করার নিয়ম ২০২৪
এখন আমরা ই-পাসপোট অনলাইনে আবেদন করার নিয়ম সম্পর্কে জানবো। সহজ ভাবে আপনাদের বুঝাতে কয়েকটি ধাপ এ পেইজ এর ছবি দিয়ে বুঝিয়ে দেওয়া হলো।
ই পাসপোর্ট অনলাইন আবেদন করতে নিচের ধাপগুলো অনুসরণ করুন:
ধাপ ১: আঞ্চলিক অফিস ও থানা নির্বাচন
ভিজিট করুন এই লিঙ্কটি: E-Passport Application. আপনি নিচের মত একটি পেইজ দেখবেন। এখানে আপনার জেলা ও থানার নাম সিলেক্ট করুন।
তারপর আপনাকে আপনার ইমেইল ভেরিফিকেশন করতে হবে। এবং আপনার ইমেইল অ্যাড্রেসটি দিয়ে নিচের রোবট ভেরিফিকেশন টিক দিয়ে Continue বাটন ক্লিক করুন।
ধাপ ২: ইমেইল ভেরিফিকেশন
এরপর পাসপোর্ট ওয়েবসাইট থেকে আপনার ইমেইলে একটি ভেরিফিকেশন মেইল লিংক পাঠাবে। আপনাকে সেই লিংকে ক্লিক করে ইমেইলটি ভেরিফাই করতে হবে।
ধাপ ৩: ব্যক্তিগত তথ্য পূরণ
ইমেইল ভেরিফিকেশন করার পর, পুনরায় ওয়েবসাইটে লগইন করুন। এখন “Apply for a New Passport” বাটনে ক্লিক করুন। Passport Type হিসেবে সাধারণ পাসপোর্ট হলে “Ordinary” এবং সরকারি আদেশে বা NOC এর মাধ্যমে পাসপোর্ট “Official” সিলেক্ট করে পরের ধাপে যান।
এবার “Save and continue” বাটনে ক্লিক করুন।
তারপর নিচের পেইজ আসবে। এখানে আপনি আপনার সকল ব্যক্তিগত তথ্য ইংরেজিতে সঠিকভাবে পূরণ করুন ।
এখানে আপনার নাম, তথ্য ও জাতীয় পরিচয়পত্র এর নাম্বার দিন এবং Save and Continue বাটনে ক্লিক করুন।
ID Documents:
ID Documents এই ধাপে আপনার আগের কোনো পাসপোর্ট আছে কিনা বা অন্য কোন দেশের পাসপোর্ট আছে কিনা এবং জাতীয় পরিচয়পত্র ও জন্ম নিবন্ধনের তথ্য দিতে হবে।
আপনার পূর্বের কোন পাসপোর্ট থাকলে “Yes” দিন আর না থাকলে “No” দিন।
পাসপোর্ট সংশোধন বা রিনিউ আবেদন: যারা পাসপোর্ট সংশোধন বা রিনিউ আবেদন করবেন তারা এক্ষেত্রে অবশ্যই “Yes” দিয়ে আগের পাসপোর্টের যাবতীয় তথ্য দিবেন।
Address:
আপনার Present Address ও Permanent Address সঠিকভাবে লিখুন। যদি বর্তমান ও স্থায়ী ঠিকানা একই হয়, নিচের বক্সে টিক দিন।
Emergency Contact:
জরুরি প্রয়োজনে যোগাযোগের জন্য আপনার পরিবারের বাবা, মা, ভাই বোন অন্য কারো নাম, ঠিকানা ও মোবাইল নম্বর দিন।
Passport Option:
এবার আপনার পাসপোর্টের পৃষ্ঠা সংখ্যা ও মেয়াদ সিলেক্ট করুন।
Delivery Option:
Passport Delivery সাধারণ নাকি জরুরি তা সিলেক্ট করুন। সাধারণ হলে “Ordinary” এবং জরুরি হলে “Express” সিলেক্ট করুন। পাসপোর্ট করতে কত টাকা লাগে তা উপরে ইতোমধ্যে আলোচনা করা হয়েছে।
সবশেষে আপনার সব তথ্য পূনরায় সতর্কতার সহিতে যাচাই বাচাই করে আবেদন জমা দিতে “Submit” বাটনে ক্লিক করুন।
ই পাসপোর্ট ফি প্রদান ও আবেদন প্রিন্ট
আপনার আবেদন করা হলে প্রিন্ট করার জন্য আপনি ২টি পৃষ্ঠা পাবেন। সেগুলো হলো:
- Application Summary
- Online Registration Form
এগুলো আপনি প্রিন্ট করে নিতে পারেন বা পিডিএফ ফাইল হিসেবে আপনার কম্পিউটারে সেইভ করে রাখতে পারে পারেন। Application summary টি ১ পৃষ্ঠা ও Online Registration form টি উভয় পৃষ্ঠায় প্রিন্ট করে নিবেন। আপনার ই পাসপোর্টের ফি বিকাশের মাধ্যমে ঘরে বসেই কীভাবে প্রদান করবেন তা নিচে আলোচনা করা হলো।
অনলাইনে ই পাসপোর্টের টাকা জমা দেওয়ার নিয়ম
অনলাইনে ই-পাসপোর্টের ফি জমা দেয়ার জন্য “A Challan” ওয়েবসাইট থেকে পাসপোর্ট ফি সিলেক্ট করুন। তারপর পাসপোর্টের পৃষ্ঠা সংখ্যা, মেয়াদ ও ডেলিভারীর ধরণ বাছাই করুন। এরপর, ব্যক্তির পরিচিতি নম্বর, নাম, ঠিকানা ও মোবাইল নম্বর লিখুন। সবশেষে সুবিধামত ব্যাংক বাছাই করে পেমেন্ট করুন এবং চালানের প্রিন্ট কপি সংগ্রহ করে রাখুন।
ধাপ ১:
অনলাইনে এ চালান করার জন্য Automated Challan System Bangladesh (A Challan) ওয়েবসাইটে ভিজিট করুন
ধাপ ২:
পাসপোর্ট অপশন থেকে পাসপোর্ট ফি তে ক্লিক করুন। আপনার সামনে নিচের ছবির মত একটি ওয়েবপেইজ ওপেন হবে। এখান থেকে প্রথমে পাসপোর্টের পৃষ্ঠার সংখ্যা বাছাই করতে হবে। তারপর পাসপোর্টের মেয়াদ ও Passport Delivery এর ধরণ বাছাই করুন। স্বয়ংক্রিয়ভাবে টাকার পরিমাণ দেখাবে। নিচ থেকে OK বাটন ক্লিক করুন।
ধাপ ৩:
এবার আপনার জাতীয় পরিচয়পত্র বা জন্ম নিবন্ধন নাম্বার, সনাক্তকরণ নাম্বার, নাম, ঠিকানা ও মোবাইল নম্বর সঠিকভাবে লিখতে হবে। ইমেইল চাইলে দিতে পারেন না দিতে পারেন যেহেতু ইমেইল অপশনাল। নাম লেখার ক্ষেত্রে অবশ্যই পাসপোর্ট আবেদনের সাথে মিল রেখে নাম লিখতে হবে। নাহলে নামের ভুলের কারণে পুরো প্রক্রিয়া বাতিল হয়ে যাবে। কারন, এ চালানে ও পাসপোর্ট আবেদনে নামের বানানে পার্থক্য থাকলে চালান গৃহীত হবে না।
বিকাশ/নগদ ও রকেটের মাধ্যমে টাকা জমা দিতে সোনালী ব্যাংক সিলেক্ট করুন। তারপর আপনি সোনালী ব্যাংকের অনলাইন একাউন্ট, ডেবিট ও ক্রেডিট কার্ড থেকেও পেমেন্ট করতে পারবেন।
এখন Save বাটনে ক্লিক করুন। তারপর আপনাকে সোনালী ব্যাংকের পেমেন্ট গেটওয়েতে নেয়া হবে।
ছবি
ধাপ ৪: এখান থেকে Account অথবা Visa/ Master Card/ Amex Card অথবা Mobile Banking অপশন সিলেক্ট করে পেমেন্ট করুন।
বিকাশ, নগদ ও রকেটের মাধ্যমে ই পাসপোর্টের টাকা জমা দেয়ার নিয়ম
নগদ রকেট ও বিকাশ বাংলাদেশে বহুল ব্যবহৃত মোবাইল ব্যাংকিং সেবা। মোবাইল ব্যাংকিংয়ের মাধ্যমে পাসপোর্ট ফি জমা দেয়ার জন্য, ৪ নং ধাপ থেকে সোনালী ব্যাংক সিলেক্ট করবেন।
এখন Save বাটনে ক্লিক করুন। আপনাকে সোনালী ব্যাংকের পেমেন্ট গেটওয়েতে নেয়া হবে। এখানে Mobile Banking বাটনে ক্লিক করে পেমেন্ট করুন।
আপনার সুবিধামত যে কোন একটি ব্যাংকিং বা মোবাইল ব্যাংকিং সেবা বাছাই করতে পারেন । আপনাদের দেখানোর জন্য আমি বিকাশ সিলেক্ট করলাম।
এখানে, Pay with bKash বাটনে ক্লিক করুন। বিকাশের পেমেন্ট অপশন আসলে, বিকাশে নির্দিস্ট পরিমান টাকা আছে এমন একটি বিকাশ নম্বর দিন। তারপর আপনার যে নম্বরে বিকাশ আছে সেই নম্বার এ এসএমএসের মাধ্যমে একটি ভেরিফিকেশন কোড আসবে। ভ্যারিফিকেশন কোড ও আপনার বিকাশের পিন নম্বার দিয়ে পেমেন্ট সম্পূর্ণ করুন।
মোবাইলের মাধ্যমে ই পাসপোর্টের টাকা জমা দেওয়ার নিয়ম
আপনি চাইলে আপনার নিজ মোবাইল থেকে ও ই-পাসপোর্টের টাকা জমা দিতে পারবেন এ জন্য সবচেয়ে ভালো হয় আপনার মোবাইলে বাংলাদেশ অর্থ মন্ত্রণালয়ের A Challan অ্যাপ ইনস্টল করে নেওয়া। উপরে দেখানো ধাপ গুলোর মতই এ চালান মোবাইল অ্যাপ থেকে পাসপোর্ট ফি খুব সহজেই পরিশোধ করতে পারবেন খুব সহজে।
ই-পাসপোর্ট পুলিশ ভেরিফিকেশন
ই-পাসপোর্ট করার সময় পুলিশ ভেরিফিকেশন একটি গুরুত্বপূর্ন অংশ। ই-পাসপোর্ট সকল তথ্য যাচাই করার জন্য পুলিশ তা ভেরিফিকেশন করে থাকে। পুলিশ ভেরিফিকেশনটি মূলত ই-পাসপোর্ট সম্পর্কিত আপনার, সকল তথ্য গুলো সটিক কি না সেটা পুলিশ পুনরায় যাচাই করে দেখে।
ই-পাসপোর্ট এর জন্য পুলিশ ভেরিফিকেশনে ভয়ের কিছু নেই। এখন জেনে নিন পুলিশ ভেরিফিকেশন কিভাবে করে থাকে।
- ই-পাসপোর্ট এর সব তথ্য যাচাই করার জন্য বা পুলিশ ভেরিফিকেশনের জন্য পুলিশ বাড়িতে বা বাসায় আসতে পারে। আর কোন কোন সময় আবার থানায়ও আপনাকে ডেকে নিতে পারে। অনেক ক্ষেত্রে উনারা কল করে যোগাযোগ করে থাকেন।
- পুলিশ যদি পাসপোর্ট ভেরিফিকেশন করার জন্য আপনাকে থানায় ডাকে, সেক্ষেত্রে আপনি যদি শিক্ষার্থী হোন তাহলে আপনি আপনার বাবাকে বা ভাইকে সাথে নিয়ে যাবেন। এ কারনে যে পুলিশ ভেরিফিকেশনের জন্য অনেক সময় আপনার বাবার স্বাক্ষর নিতে পারে।
আপনি ই-পাসপোর্ট এর পুলিশ ভেরিফিকেশন এর সময় যে যে তথ্য আবেদন এর সময় দিয়েছিলেন সেই সব প্রয়োজনীয় ডকুমেন্ট সাথে রাখবেন বা আপনি সেই ডকুমেন্ট গুলো একসাথে প্রস্তুত করে রাখুন। আপনার বুঝার জন্য প্রয়োজনীয় ডকুমেন্ট গুলো কি কি তা নিচে দেওয়া হল-
- ভোটার আইডি কার্ডের কপি (NID Copy)
- Student ID Copy
- HSC/SSC Certificate/MarkSheet
- Father’s NID Card
- Mother’s NID Card
- Utility Bill copy
- আপনার স্থায়ী ঠিকানার এবং জমি বা বাড়ির কাগজপত্র
আশা করি সব ডকুমেন্টস গুলো সটিক হলে এবং তা আবেদনের সময় দেওয়া ডকুমেন্টস গুলোর সাথে মিললে এবং সব কাগজ থাকলে খুব সহজে আপনার পুলিশ ভেরিফিকেশন হয়ে যাবে।
আরও পড়ুনঃ পাসপোর্ট চেক ২০২৪ | ই-পাসপোর্ট চেক করার নিয়ম | E-Passport Check
ই-পাসপোর্ট পেতে কতদিন সময় লাগে?
উপরের অনুচ্ছেদে আমরা জানলাম ই-পাসপোর্ট এর জন্য পুলিশ ভেরিফিকশন কীভাবে করবেন। এখন আমরা জানবো ই-পাসপোর্ট পেতে কতদিন সময় লাগে?
সাধারণত একটি নতুন ই-পাসপোর্ট করার সময় আমাদের বিভিন্ন রকম সমস্যার সম্মুখীন হয়ে থাকি । আর এটাও অনেক সময় বিভিন্ন দালালের মাধ্যমে পাসপোর্ট করতে অনেক বেশি ভোগান্তিতে ও ভুগতে হয় আমাদের ।
আপনার যদি নতুন পাসপোর্ট বা পাসপোর্ট রিনিউ করতে চান সেক্ষেত্রে আপনার পাসপোর্ট আবেদনের পর অনেক প্রসেস এর মধ্য দিয়ে যেতে হয়। যার জন্য পাসপোর্ট অফিস কখনো ৭ দিন, ১৫ দিন বা ২১ দিন সময় নেয় পাসপোর্ট ডেলিভারি দেওয়ার জন্য । এই সময়ের মধ্যে অনেকগুলো পর্যায় পার হয়ে তারপর আপনার পাসপোর্ট প্রিন্ট হয়ে গেলে আপনার জন্য রেডি হয়।
আগে আবেদন করে আমরা কোনোভাবেই জানতে পারতাম না আমাদের পাসপোর্ট এর কি অবস্থা। এই ঝামেলা এবং ভোগান্তি থেকে আপনাকে অনেকটাই মুক্তি দেবে ই-পাসপোর্ট পোর্টাল স্ট্যাটাস চেক। বর্তমানে আপনি নতুন পাসপোর্ট বা পাসপোর্ট রিনিউ এর জন্য আবেদন করার পরে আপনার পাসপোর্ট কোন অবস্থায় আছে তা দেখতে পারবেন।
আরও পড়ুনঃ পাসপোর্ট স্ট্যাটাস চেক করুন (২ মিনিটে) | Online E-Passport Status Check
শেষ কথা
আশা করি আপনারা উপরের সব আলোচনা থেকে আজকে ই-পাসপোর্ট সম্পর্কে একটি বিস্তারিত তথ্য পেয়েছেন৷ ই পাসপোর্ট কি, ই-পাসপোট আবেদন এর নিয়ম, কি কি ডকুমেন্টস প্রয়োজন, পাসপোর্ট পেতে কতো দিন সময় লাগে,পাসপোর্ট করতে কতো টাকা খরচ হয় ইত্যাদি।
তারপরও যদি আপনাদের বুঝতে অসুবিধা হয় বা আর কিছু জানার থাকে তাহলে কমেন্ট বক্স এ কমেন্ট করে জানিয়ে দিন। আমরা আপনার প্রশ্নের উওর দেওয়ার চেষ্টা করবো।